ঢাকা ০৯:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় ক্ষতিগ্রস্তরা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২১:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী ২০২১
  • ১৫১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ ৫০ লাখ ও সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে সরকার। ঋণ প্রদান সংক্রান্ত একটি নীতিমালা এরই মধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই খাতে নতুন তহবিল থেকে ঋণ দেয়া হবে। তবে এ ঋণের অর্থ দিয়ে গ্রাহক তার আগের নেয়া কোনো ঋণ সমন্বয় বা পরিশোধ করতে পারবেন না।

এসব বিধান রেখে‘নভেল করোনাভাইরাস প্রভাব মোকাবিলায় কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্রশিল্প উদ্যোক্তাদের দ্রুত ঋণ প্রদান’ সহায়ক নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই অর্থমন্ত্রীর অনুমোদনের পর এটি কার্যকর হবে।

সূত্রে জানা গেছে, সিএমএসএমই (কটেজ, মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ) খাতকে ঋণ দেয়ার জন্য তহবিলের অর্থ দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক বা অর্থ মন্ত্রণালয়। সে তহবিলের অর্থ প্রথমে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আবার আড়াই শতাংশ সুদে সেটি বিতরণ করবে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা (এমএফআই) ও অন্যান্য ঋণ সংস্থার কাছে। এসব সংস্থা ওই তহিবলের অর্থ গ্রাহককে দেবে ১৪ শতাংশ সুদে। তবে এর মধ্যে গ্রাহক পরিশোধ করবে ৯ শতাংশ। এই তহবিলের মেয়াদ হবে ৫ বছর।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এমকে মুজেরী বলেন, এমনিতেই সিএমএসএমই খাতে ঋণ পেতে সমস্যা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে এটি আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। কাজেই তাদের সহায়তা দরকার। এছাড়া সিএমএসএমই খাত কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই বিষয়টি সরকার আরো ভেবে দেখতে পারে।

জানা গেছে, করোনার প্রভাব মোকাবিলায় ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা হচ্ছে এসএমই খাতের জন্য। তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত এসএমই খাতে ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়। এসব প্যাকেজ বাস্তবায়নে কী ধরনের সমস্যা, সেটি শনাক্ত করতে দেশের অর্থনীতিবিদ, শিল্প উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী নিয়ে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় একটি সিরিজ বৈঠক আয়োজন করেছে।

সিরিজ বৈঠকে এসএমই খাতকে আরো বেশি গুরুত্ব দেয়ার সুপারিশ উঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এসএমই খাতের প্রণোদনা প্যাকেজ গতিশীল করতে সিএমএসএমই খাতকেও অন্তর্ভুক্ত করে একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, এই নীতিমালার আওতায় কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত কুটি, মাইক্রো ও ক্ষুদ্রশিল্প উদ্যোক্তাদের কার্যক্রম অব্যাহতি রাখার লক্ষ্যে চলতি মূলধন ঋণ আকারে দেয়া হবে। এই ঋণ পাওয়ার অগ্রাধিকার তালিকায় আছে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ অধিদফতর, বিসিকসহ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, বিদেশ বা শহরে ফেরত আসা উদ্যোক্তারা।

খসড়া নীতিমালায় আরো বলা হয়, গ্রাহক একক বা গ্রুপ পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা, কটেজ উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা এবং মাইক্রো উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা এবং স্মল উদ্যোক্তা ঋণ সহায়তা পাবেন ৫০ লাখ টাকা।

এদিকে খসড়া নীতিমালা প্রণয়নের যৌক্তিকতায় বলা হয়, প্রান্তিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রণোদনা প্যাকেজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য দ্রুত নিরসনে সিএমএসএমই খাত মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এ খাতে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা (এমএফআই) এবং বিশেষায়িত ব্যাংক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

করোনায় ক্ষতিগ্রস্তরা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন

আপডেট টাইম : ১১:২১:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ ৫০ লাখ ও সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে সরকার। ঋণ প্রদান সংক্রান্ত একটি নীতিমালা এরই মধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই খাতে নতুন তহবিল থেকে ঋণ দেয়া হবে। তবে এ ঋণের অর্থ দিয়ে গ্রাহক তার আগের নেয়া কোনো ঋণ সমন্বয় বা পরিশোধ করতে পারবেন না।

এসব বিধান রেখে‘নভেল করোনাভাইরাস প্রভাব মোকাবিলায় কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্রশিল্প উদ্যোক্তাদের দ্রুত ঋণ প্রদান’ সহায়ক নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই অর্থমন্ত্রীর অনুমোদনের পর এটি কার্যকর হবে।

সূত্রে জানা গেছে, সিএমএসএমই (কটেজ, মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ) খাতকে ঋণ দেয়ার জন্য তহবিলের অর্থ দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক বা অর্থ মন্ত্রণালয়। সে তহবিলের অর্থ প্রথমে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আবার আড়াই শতাংশ সুদে সেটি বিতরণ করবে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা (এমএফআই) ও অন্যান্য ঋণ সংস্থার কাছে। এসব সংস্থা ওই তহিবলের অর্থ গ্রাহককে দেবে ১৪ শতাংশ সুদে। তবে এর মধ্যে গ্রাহক পরিশোধ করবে ৯ শতাংশ। এই তহবিলের মেয়াদ হবে ৫ বছর।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এমকে মুজেরী বলেন, এমনিতেই সিএমএসএমই খাতে ঋণ পেতে সমস্যা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে এটি আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। কাজেই তাদের সহায়তা দরকার। এছাড়া সিএমএসএমই খাত কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই বিষয়টি সরকার আরো ভেবে দেখতে পারে।

জানা গেছে, করোনার প্রভাব মোকাবিলায় ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা হচ্ছে এসএমই খাতের জন্য। তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত এসএমই খাতে ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়। এসব প্যাকেজ বাস্তবায়নে কী ধরনের সমস্যা, সেটি শনাক্ত করতে দেশের অর্থনীতিবিদ, শিল্প উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী নিয়ে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় একটি সিরিজ বৈঠক আয়োজন করেছে।

সিরিজ বৈঠকে এসএমই খাতকে আরো বেশি গুরুত্ব দেয়ার সুপারিশ উঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এসএমই খাতের প্রণোদনা প্যাকেজ গতিশীল করতে সিএমএসএমই খাতকেও অন্তর্ভুক্ত করে একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, এই নীতিমালার আওতায় কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত কুটি, মাইক্রো ও ক্ষুদ্রশিল্প উদ্যোক্তাদের কার্যক্রম অব্যাহতি রাখার লক্ষ্যে চলতি মূলধন ঋণ আকারে দেয়া হবে। এই ঋণ পাওয়ার অগ্রাধিকার তালিকায় আছে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ অধিদফতর, বিসিকসহ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, বিদেশ বা শহরে ফেরত আসা উদ্যোক্তারা।

খসড়া নীতিমালায় আরো বলা হয়, গ্রাহক একক বা গ্রুপ পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা, কটেজ উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা এবং মাইক্রো উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা এবং স্মল উদ্যোক্তা ঋণ সহায়তা পাবেন ৫০ লাখ টাকা।

এদিকে খসড়া নীতিমালা প্রণয়নের যৌক্তিকতায় বলা হয়, প্রান্তিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রণোদনা প্যাকেজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য দ্রুত নিরসনে সিএমএসএমই খাত মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এ খাতে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা (এমএফআই) এবং বিশেষায়িত ব্যাংক।